হাবিব জিহাদী,ভালুকার কন্ঠ
১। চতুর্থ শতকে পৌত্তলিক, মূর্তিপূজারৌদ্র সমাজে প্রচলিত ছিলো।
তারা দেবতাদের পূজা করতো,অনুষ্ঠান শেষে যুবতীদের নামে লটারি ইস্যু করতো।
যার ভাগে যে যুবতী পরতো,আগামী বছর এ দিন আসা পর্যন্ত ঐ যুবক ঐ যুবতীকে ভোগ করতো।
আর সেই তারিখ-১৪ ফেব্রুয়ারি!
২। এরপর,যখন খ্রিষ্ট ধর্ম আবির্ভূত হল,তারা লটারির সিষ্টেম পরিবর্তন করে যুবতীর স্থানে পাদ্রীর নাম দিয়ে নতুন ভাবে যাত্রা শুরু করলো।
যে যুবকের ভাগে যে পাদ্রীর নাম আসবে ঐ যুবক এক বছর ঐ পাদ্রীর সংস্পর্শে থাকবে।
সেই তারিখটিও ১৪ ফেব্রুয়ারি!
৩। ৪৭৬ সালে প্রস্তাব আসে নাম পরিবর্তনের!
৪৯৬ সালে একজন যাজক যার নাম ছিলো ভ্যালেন্টাইন তার সম্মানে দিবসের নাম করন করা হয়
১৪ ফেব্রুয়ারি!
৪। সে ভ্যালেন্টাইন যাকে রোমান রাজা কারাবন্দী করে,
তিনি অন্তরীণ হওয়ার পর কারাগারের প্রধান রক্ষকের মেয়ের প্রেমে পড়েন!
মৃত্যুর আগে তার জন্য যাজক একটা চিরকুট লিখে যান।
১৪ ফেব্রুয়ারি এই যাজক মারা যাওয়ার পর তার মৃত্যু বার্ষিকী পালন করা হয়,
সেই দিনের নাম রাখা হয় ভ্যালেন্টাইন`স্ ডে!
৫। এক রাজা ঘোষনা করলো তার সেনা বাহিনীর কেউ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেনা,
এই সিদ্ধান্ত দশ বছর স্থায়ী হয়।
তারপর,এক সৈনিক ১৪ ফেব্রুয়ারির এই দিনে রাজার সিদ্ধান্তকে পিছনে ফেলে দাম্পত্য জীবনে পদার্পণ করেন।
সে কারনেই দিনটিকে ভালোবাসা দিবস হিসাবে পালন করা হয়!
৬। আমেরিকা,কানাডা,বৃটেন,ইতালি ইউরোপ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে উদযাপন করা হয় এই দিবসটি।
বিশেষ করে কার্ড বিনিময়, ফুল বিনিময়, নৃত্য,গান,আপ্যায়ন,ভ্রমন দিয়ে দিবস টি পালন করা হয়।
বৃটেন ও ইটালির মেয়েরা এই দিনে সূর্য উদিত হবার আগ থেকে ঘুম থেকে উঠে জানালার পাশে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকে,
তারা অপেক্ষা করতে থাকে কোন পুরুষের মুখ দর্শনার্থী।
তাদের বিশ্বাস সেদিন প্রথম যে পুরুষের চেহারা দেখবে এক বছরের মধ্যে তার সাথে কিংবা এমন কারো সাথে তার বিয়ে হবে!
৭। ২০০০ সালে থাইল্যান্ডের একটি দ্বীপে ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপন করার জন্য
যুবক-যুবতীরা অথৈ পানিতে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার উদ্দেশ্যে ডুব দেয়।
তাদের সহায়তায় ৩০ ফুট পানির নিচে থাইল্যান্ডের এক কর্মকর্তা ব্যবস্থা করেন।
প্রেমিক প্রেমিকারা বিয়ের শপথ বাক্য পাঠ করে কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সনদ গ্রহন করে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন।
সে বছর ডেনমার্ক,থাইল্যান্ড,অষ্ট্রলিয়া,ইংল্যান্ড,ফ্রান্স সহ প্রায় ৩০ টি দেশ এই ভাবে দিবসটিকে উদযাপন করেন।
তারি ফলে আমাদের আদর্শ ছাত্র সমাজ
বই,খাতা,কলম ছুঁয়ে ফেলে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে,
পার্কে, মিনি চাইনিজ গুলোতে আপত্তিকর অবস্থায় আড্ডা দিচ্ছে।
ধ্বংস করছে নীতিবোধ,লজ্জাবোধ, শালীনতা!
শেষ কথা হল…
দিবসটি থেকে আমরা পাচ্ছি
অশ্লীলতা,উগ্রতা,বেহায়াপনা!
কার্ড বিনিময়,ফু্ল বিনিময়,প্রেমিক-প্রেমিকাদের একান্তে আড্ডা,বই বিনিময়,ভালোবাসা,প্রেম বিনিময় ও ওপেন রিলিজিয়নশিপের মাধ্যমে উদযাপন হচ্ছে
বিবেকবানদের সামনে!
আসুন আমরা পরিহার করি লজ্জাহীন এই উন্মাদনা…..
লেখক
শিক্ষক,সাংবাদিক ও
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী